Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৪ এপ্রিল ২০২২

বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে ২৩ এপ্রিল ২০২২, শনিবার, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইস্ফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে পালিত হলো বিশ্ব গ্রন্থ ও কপিরাইট দিবস ২০২২।


প্রকাশন তারিখ : 2022-04-23

বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন (বিএনসিইউ)

 

বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে ২৩ এপ্রিল ২০২২, শনিবার, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইস্ফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে পালিত হলো বিশ্ব গ্রন্থ ও কপিরাইট দিবস ২০২২।

 

এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ আবু বকর ছিদ্দীক, মান্যবর সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সেক্রেটারি জেনারেল, বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব জাফর রাজা চৌধুরী, সাবেক রেজিস্ট্রার, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস এবং জনাব আনিসুল হক, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জনাব মোঃ সোহেল ইমাম খান (যুগ্মসচিব), ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল, বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন। সভায় সভাপতিত্ব করেন, সর্বজনশ্রদ্ধেয়, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, সভাপতি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।

 

জনাব মোঃ সোহেল ইমাম খান তাঁর স্বাগত বক্তব্যে ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার মূলমন্ত্র নিয়ে ইউনেস্কোর যাত্রা শুরুর ইতিহাস এবং ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রে ন্যশনাল কমিশন প্রতিষ্ঠা ও এর কার্যক্রমের বিস্তৃতি বিষয়ে আলোচনা করেন। বই পড়া ও বই প্রকাশের বিভিন্ন সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জের বিষয়ে আলোচনাকালে তিনি বলেন, প্রযুক্তির ক্রমবিকাশের সাথে সাথে পরিবর্তন আসছে পাঠকের মনস্তত্ত্বে এবং পুস্তক প্রকাশের মাধ্যমে। এই ক্রমবিকাশের সাথে বই প্রকাশের সনাতন পদ্ধতির মেলবন্ধন জরুরি। একইসাথে অত্যন্ত জরুরি হলো কপিরাইটের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে তিনি স্বাগত জানান এবং এই সুন্দর আয়োজনে সহযোগিতা করবার জন্য বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানান।

 

জনাব জাফর রাজা চৌধুরী কপিরাইট আইনের ইতিহাস, ইনটেলেকচুয়াল এবং ক্রিয়েটিভ প্রোপার্টি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সচেতনতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে উপস্থিত সুধীজনদের অবহিত করেন। তিনি একজন লেখক, কবি তথা সাহিত্যিকের মোরাল রাইট ও ইকোনমিক রাইট প্রসংগে শ্রদ্ধাশীল ও সচেতন হবার আহবান জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশে প্রচলিত কপিরাইট আইন ২০০৫ (সংশোধিত) এর আসন্ন সংশোধিত ও পরিমার্জিত সংস্করণ একজন সৃষ্টিশীল ব্যক্তির প্রোপার্টিকে আরও অধিকতর নিরাপত্তা প্রদানে সক্ষম হবে।

 

জনাব আনিসুল হক বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রায় ৩০ লক্ষ পাঠকের কাছে নিয়মিতভাবে বই পৌছে দিচ্ছে। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে মোম আছে, সলতে আছে। বই সেটি প্রজ্জ্বলিত করে দিতে পারে। যার হাতে বই থাকে তিনিই হয়ে ওঠেন একজন সুন্দর মানুষ। তিনি কবিতার পাঠের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেন, কবিতা, শিল্পসাহিত্য, পুস্তক মানুষের হৃদয়কে শুশ্রুষা করে।

 

প্রধান অতিথি জনাব মোঃ আবু বকর ছিদ্দীক, আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিশ্ব গ্রন্থ ও কপিরাইট দিবস পুরো দেশেই উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হবে। এই আয়োজনে আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, কপিরাইট অফিস ও অন্যান্য দপ্তর সংস্থাও যুক্ত হবে। তিনি তাঁর বক্তব্যে  এই উপমহাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা এখন একটি ট্রানজিশনাল পিরিয়ডের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই বিশেষ সময়ে সংবাদপত্র তাদের সাহিত্য পাতা সমৃদ্ধ করবার মাধ্যমে রুচিশীল পাঠক তৈরি করতে সহায়তা করতে পারে। বাংলা সাহিত্যে পুথিসাহিত্য এবং মরমি সাহিত্যের বিশাল ভূমিকা রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন বাংলার এই প্রাচীন সাহিত্য যথাযথভাবে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। অবসর কাটানো, নিজেকে সমৃদ্ধ করার জন্য পাঠাভ্যাসের চর্চা করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করেন। আলোকিত মানুষ গড়বার যে আন্দোলন তিনি পরিচালনা করছেন সেটি সমহিমায় অগ্রসর হতে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

অনুষ্ঠানের সভাপতি, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, যারা স্বাপ্নিক মানুষ তারা সব সময়ই একধরনের তাড়না অনুভব করেন এবং এই তাড়নাই জগতকে আলোকিত করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। পৃথিবীতে বই বেঁচে থাকবেই। তবে কপিরাইট সম্পর্কে সচেতনতা, যারা বই লেখেন তাঁদের সম্মানের সাথে বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, লোকে বই পড়ছে না, এই কথাটি প্রকৃত অর্থে ঠিক নয়। বই পড়া বা পড়ানোর জন্য জাতীয় উদ্যোগ সবচেয়ে জরুরি। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

 

উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতিবছর ২৩শে এপ্রিল ইউনেস্কো (UNESCO) বই পড়ার প্রতি গুরুত্ব ও সচেতনতা বাড়াতে ও বইয়ের জগতের অপরিহার্য অংশ মেধাস্বত্ত্ব বা কপিরাইট বিষয়ে মানুষকে আগ্রহী করতে ‘বিশ্ব গ্রন্থ ও কপিরাইট দিবস’ পালন করে আসছে।

 

অনুষ্ঠানের ছবি দেখতে ক্লিক করুন।

 

 

এস এম ফয়সাল আরাফাত

প্রোগ্রাম অফিসার

বিএনসিইউ